রজব মাসের আমল যা যা করা প্রয়োজন
রজব মাসের আমল যা যা করা প্রয়োজন
রজব মাস হলো আরবি চান্দ্রবর্ষের সপ্তম মাস। এ মাসকে ‘রজবুল মুরাজ্জাব’ বা ‘আশহুরে হুরুম’ নামেও অভিহিত করা হয়। ‘রজব’ শব্দের অর্থ হলো ‘সম্ভ্রান্ত’, ‘প্রাচুর্যময়’, ‘মহান’। ‘মুরাজ্জাব’ শব্দের অর্থ হলো ‘সম্মানিত’। সুতরাং, ‘রজবে মুরাজ্জাব’ অর্থ হলো ‘প্রাচুর্যময় সম্মানিত মাস’।
রজব মাসের ফজিলত অপরিসীম। এ মাসের আমল করলে আল্লাহ তাআলার রহমত ও বরকত লাভ করা যায়। রজব মাসে বিশেষ কিছু আমল করা সুন্নত।
রজব মাসের আমল
রোজা রাখা: রজব মাসের ফজিলতপূর্ণ আমল হলো রোজা রাখা। নবী করিম (সা.) রজব মাসের রোজা রাখতেন। তবে রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসের রোজা রাখার নির্দিষ্ট সংখ্যার কোনো সহিহ হাদিস নেই। তাই ইচ্ছামতো রোজা রাখা যায়।
তাওবা করা: রজব মাস হলো তাওবার মাস। এ মাসে বেশি বেশি তাওবা করলে আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেন।
জিকির করা: রজব মাস হলো জিকিরের মাস। এ মাসে বেশি বেশি জিকির করলে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ করা যায়।
দোয়া করা: রজব মাস হলো দোয়া কবুলের মাস। এ মাসে বেশি বেশি দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করেন।
রজব মাসের বিশেষ কিছু আমল
প্রথম দশকের আমল: রজব মাসের প্রথম দশকে বেশি বেশি দোয়া করা, কোরআন তিলাওয়াত করা, নফল ইবাদত করা, দান-সাদকা করা, গরীব-দুঃস্থদের সাহায্য করা, পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নত করা, ঝগড়া-বিবাদ মিটিয়ে দেওয়া ইত্যাদি আমল করা উচিত।
রজব মাসের শেষ ১০ দিনের আমল: রজব মাসের শেষ ১০ দিনের আমল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ দিনে আল্লাহ তাআলার রহমত ও বরকত বর্ষিত হয়। তাই এ দশকে বেশি বেশি দোয়া করা, কোরআন তিলাওয়াত করা, নফল ইবাদত করা, দান-সাদকা করা, গরীব-দুঃস্থদের সাহায্য করা, পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নত করা, ঝগড়া-বিবাদ মিটিয়ে দেওয়া ইত্যাদি আমল করা উচিত।
রজব মাসের কিছু দোয়া
রজব মাসের শুরুতে পড়া দোয়া:
আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবাও ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রমাদান
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিন।
রজব মাসের শেষ ১০ দিনের আমলের দোয়া:
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল ইয়াফিয়াতা ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরাতি ওয়াল মাফিয়াতা ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির
অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে সুস্থতা, ক্ষমা চাই। নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রজব মাসের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
রজব মাসের ২৬ তারিখে শবে মেরাজ অনুষ্ঠিত হয়। এটি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। তিনি জান্নাত, জাহান্নাম, আসমান ও পৃথিবীর অনেক অলৌকিক দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছিলেন।
শবে মেরাজের ঘটনা
শবে মেরাজের ঘটনা সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এক রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন। তখন জিবরাইল (আ.) এসে তাঁকে জাগ্রত করেন এবং তাঁকে বোরাকে আরোহণ করান। বোরাক হলো এক ধরনের বাহন, যা ঘণ্টায় ষাট মাইল বেগে চলতে পারে।
বোরাকে আরোহণ করে হযরত মুহাম্মদ (সা.) প্রথমে বাইতুল মুকাদ্দাসে পৌঁছান। সেখানে তিনি অন্যান্য নবী-রাসুলদের সাথে নামাজ আদায় করেন। এরপর তাঁকে বোরাকে আরোহণ করিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এক পর্যায়ে হযরত মুহাম্মদ (সা.) আসমানে পৌঁছান। সেখানে তিনি আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, নামাজ ফরজ করেন।
শবে মেরাজের ফজিলত অপরিসীম। এই রাতে আল্লাহ তাআলার রহমত ও বরকত বর্ষিত হয়। তাই এ রাতে বেশি বেশি দোয়া করা উচিত।
শবে মেরাজের কিছু আমল
রোজা রাখা: শবে মেরাজের রাতে রোজা রাখা সুন্নত।
তাহাজ্জুদ পড়া: শবে মেরাজের রাতে তাহাজ্জুদ পড়া বিশেষভাবে ফজিলতপূর্ণ।
জিকির ও দোয়া করা: শবে মেরাজের রাতে বেশি বেশি জিকির ও দোয়া করা উচিত।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শবে মেরাজের ফজিলত লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
রজব মাসের আমল নিয়ে বইটি প্রয়োজন হলে ডাউনলোড করে নিন-